মিসাইল হলো একটি স্বচালিত যুদ্ধাস্ত্র যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করা হয় এবং এটি এক বা একাধিক বিস্ফোরক সরঞ্জাম বহন করতে সক্ষম। মিসাইলের মূল বৈশিষ্ট্য হলো, এটি লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত করার জন্য স্বয়ংক্রিয় গাইডিং সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। মিসাইলের শ্রেণিবিন্যাস সাধারণত এর পরিসীমা, গতি, আকার এবং ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে করা হয়। ছোট দূরত্বের মিসাইল থেকে শুরু করে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইল পর্যন্ত এর বৈচিত্র্য রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে মূলত প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ উভয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং সামরিক ক্ষমতার আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মিসাইলের প্রধান অংশগুলো হলো ফিউজেলাজ, ওয়ারহেড, ইঞ্জিন এবং গাইডিং সিস্টেম। ফিউজেলাজ হলো মিসাইলের মূল কাঠামো যা এর সমস্ত উপাদান ধারণ করে এবং গতির জন্য সহায়ক। ওয়ারহেড হলো বিস্ফোরক পদার্থের অংশ, যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার সময় বিস্ফোরিত হয়। মিসাইলের ইঞ্জিন হিসেবে ব্যবহৃত হয় রকেট ইঞ্জিন বা জেট ইঞ্জিন, যা মিসাইলকে দ্রুত গতিতে লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায়। গাইডিং সিস্টেম মিসাইলকে লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করে এবং এটি রাডার, ইনফ্রারেড, জিপিএস ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
মিসাইল সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে—ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং ক্রুজ মিসাইল। সারমাত মিসাইল ব্যালিস্টিক মিসাইল একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর পৃথিবীর মহাকর্ষীয় শক্তির মাধ্যমে গতি লাভ করে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যা দীর্ঘ দূরত্বে আঘাত হানার জন্য উপযুক্ত। অন্যদিকে, ক্রুজ মিসাইল কম উচ্চতায় উড়ে এবং নির্দিষ্ট গতিপথ ধরে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছে, যা এর চেহারা ও গতিপথের কারণে প্রতিপক্ষের রাডারে ধরা পড়া কঠিন করে তোলে। মিসাইল ব্যবহারের সময় প্রযুক্তিগত সূক্ষ্মতা ও সুনির্দিষ্টতার কারণে আধুনিক যুদ্ধে এটি একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।